অনেকের রূপ রহস্য জিজ্ঞাসা করলে জানা যায় তারা শুধুমাত্র অলিভ অয়েল ত্বকে মেখে থাকেন। ত্বকের সুস্থতায় জলপাইয়ের তেল ভূমিকা জাদুর মত কাজ করে। শীতকালে অনেকের ত্বক অতিরিক্ত রুক্ষ হয়ে গেলেও শুষ্ক ত্বকের সমস্যায় অনেকে বারো মাসেই ভুগে থাকেন। শরীর তার চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত পানি না পেলে বা জেনেটিক কারণে শুষ্ক ত্বকে সমস্যার মধ্যে পরতে হয়। শুষ্ক ত্বকের সমস্যা থেকে রেহাই পেতে শরীরকে ভিতর থেকে হাইড্রেট রাখার পাশাপাশি ব্যবহার করা যেতে পারে অলিভ অয়েল।
অলিভ অয়েল বাইরে থেকে ত্বককে আদ্রতা দেয় ও শুষ্কতা অনেক অংশে কমিয়ে দেয়। সরাসরি জলপাইয়ের তেল ব্যবহার করা যেতে পারে অথবা মশ্চারাইজারের সাথে মিশেও জলপাইয়ের তেল ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন। তবে ঋতুভেদে নির্ভর করছে কতটুকু পরিমাণ এই তেল ত্বকে ব্যবহার করবেন। শীতের সময় পানি সংস্পর্শে গেলে অলিভ অয়েল মেখে নেয়া যেতে পারে। কারণ শীতের সময় আবহাওয়াতে আর্দ্রতার পরিমাণ সবচেয়ে কম থাকে তাই শুষ্কতার প্রবণতা অনেক বেশি বেড়ে যায়। অনেকে মনে করেন জলপাইয়ের তেল শুধু শুষ্ক ত্বকের জন্য কিন্তু তৈলাক্ত ত্বকেও পরিমাণ বুঝে এই তেল ব্যবহার করা যেতে পারে৷ কারণ এই তেল ত্বককে শুষ্কতা দূর করার পাশাপাশি আরো অনেক উপকার দিয়ে থাকে।
অলিভ অয়েলের উপকারিতা
রোদে পুড়ে কিংবা নানা কারণে অনেকের অকালে বলি রেখা বা বয়সে ছাপ মুখে পরে যায়। মুখের বলিরেখা ও পোরস কমাতে অলিভ অয়েল সাহায্য করে। তাছাড়াও, অতিরিক্ত তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণের প্রবণতা অনেক বেশি থাকে। জলপাইয়ের তেল ব্রণের ইনফেকশন কমাতে সাহায্য করে। তবে তৈলাক্ত ত্বকে খুব বেশি পরিমাণে জলপাইয়ের তেল ব্যবহার না করাই ভালো, তাদের ত্বক তেল চিটচিটে তারা সরাসরি জলপাইয়ের তেল ব্যবহার না করে মশ্চারাইজারের সাথে মিশিয়ে মুখে ব্যবহার করতে পারে৷ অনেকের দেহের বিভিন্ন অংশে ফাঙ্গাল ইনফেকশনের সমস্যা থাকে ফাঙ্গালের মধ্যে এই তেল লাগালে ফাঙ্গালের ব্যাকটেরিয়া অনেকটা কমে আসে। উপরন্তু, শরীরের বিভিন্ন অংশ যেমন হাটু, কোনুই, কাঁধ এসব জায়গায় কালো দাগ পড়ে যায় সেসব স্থানেও এই তেল ভালো করে মাসাজ করা যেতে পারে।
অলিভ অয়েল দিয়ে ত্বক ও মাসাজের উপকারিতা
অলিভ অয়েল মাসাজের ফলে সেসব স্থানের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পেয়ে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায় ও নানা ধরনের সমস্যা দূর হয়।
অনেকের পায়ের গোড়ালি ফেটে গিয়ে রক্ত পড়ার সমস্যা থাকে সে সমস্যা দূর করতে নিয়মিত অলিভ অয়েল ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়াও, এই তেল ত্বকের কোলাজেন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। ফলে ত্বকের হারিয়ে যাওয়া উজ্জ্বলতা ফিরে আসে ও মলিনতা কমে যায়। এই তেলে এ রয়েছে প্রচুর পরিমাণ এর ভিটামিন ডি ও ভিটামিন কে, যা ত্বকের নানা ধরনের ক্ষত সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে। রোজ টুকটাক মেকআপ সবারই করা হয়, ঘরে ফিরে সেই মেকআপ ভালো করে তুলে ফেলা অনেক বেশি জরুরী। তা না হলে ত্বকের লোমকূপ বন্ধ হয়ে গিয়ে ব্রনের মত নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। মেকআপ তুলে ত্বকে পরিষ্কার করতেও এই তেল সাহায্য করতে পারে। সুতির কাপড় কিংবা তুলোর মধ্যে কয়েক ফোটা এই তেল নিয়ে সম্পূর্ণ মুখে মাসাজ করলে পুরো মেকআপ উঠে আসে।
উপসংহার
সুতরাং, ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে এবং সুন্দর ত্বক পেতে অলিভ অয়েল একটি অপরিহার্য উপাদান। নিয়মিত ব্যবহারের মাধ্যমে এটি আপনার ত্বককে সুস্থ, উজ্জ্বল এবং প্রাণবন্ত রাখতে সহায়তা করবে। তবে, যাদের ত্বকে বিশেষ সমস্যা রয়েছে, তাদের উচিত ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া।