অনেক সময় মেয়েদের মুখে কিংবা সেসব স্থানে লোম থাকার কথা না সেসব স্থানে অবাঞ্ছিত লোম দেখা যায়। যার ফলে অনেক মেয়েদের মধ্যে হীনমন্যতার সৃষ্টি হয়। ফেসিয়াল হেয়ার ও বিভিন্নভাবে সাময়িকভাবে লোম তুলে ফেলা গেলেও কেন হচ্ছে এই অবাঞ্ছিত লোম তা জানা জরুরি। তাই জেনে নেয়া যাক নারীর অবাঞ্ছিত লোমের কারণ।
হরমোনাল সমস্যা :
অবাঞ্ছিত লোমের একটি অন্যতম কারণ হচ্ছে হরমোনাল সমস্যা।
মেয়েদের শরীরে যখন এন্ড্রোজেন হরমোনের পরিমান বেড়ে যায় তখন অবাঞ্ছিত লোম দেখা দিতে পারে। এন্ড্রোজেন একটি পুরুষ হরমোন, একজন সুস্থ নারীর দেহে এই হরমোনের পরিমাণ অল্প পরিমানের থাকে৷ এন্ড্রোজেন হরমোন বেড়ে গেলে নারীদের কন্ঠ ও দেহের গঠন কিছুটা পুরুষদের মতো হয়ে যেতে পারে।
পিসিওএস :
মেয়েদের আরেকটি কমন সমস্যা নাম পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম। যাকে সংক্ষেপে পিসিওএস বলা হয়। পিসিওএসে মেয়েদের শরীরে টেস্টোস্টেরনের পরিমান প্রয়োজনের তুলনায় বেড়ে যায়। পিসিওএস হলে শরীরে ইনসুলিন ঠিক মতো কাজ করে না। ইনসুলিন ঠিকমতো কাজ না করার ফলে শরীরের ওজন বেড়ে যেতে বেড়ে যেতে থাকে। সুতরাং পিসিওএস হলে অবাঞ্ছিত লোমের পাশাপাশি ওবিসিটির সমস্যাও দেখা দেয়, পাশাপাশি থাকে অনিয়মিত মাসিক৷ মূলত টেস্টোস্টেরণের পরিমান বেড়ে যাওয়ার কারণেই লোম দেখা দেয়৷
পিটুইটারি টিউমার :
পিটুইটারি চোখের পিছনে, মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাসের নিচ থেকে বেরিয়ে আসে। পিটুইটারি গ্রন্থি অন্যান্য গ্রন্থি নিয়ন্ত্রণ করে এবং সারা শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখে। এছাড়া এটি নারীদের কিডনি, স্তন এবং জরায়ুর মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলির কার্যকারিতাও নিয়ন্ত্রণ করে। পিটুইটারিতে টিউমার হলে দেহের হরমোন ভারসাম্য হারায়। তখন নারীদের শরীরে অবাঞ্ছিত লোম দেখা দেয়৷
অন্যান্য কারণ :
অনেক ক্ষেত্রে দেহে অবাঞ্ছিত লোমের কারণ সঠিকভাবে নির্ণয় করা যায় না৷ জিনগত কারণেও অনেকের অবাঞ্ছিত লোম দেখা দেয়, মা কিংবা পরিবারের রক্তের সম্পর্কের কোন নারীর যদি অবাঞ্ছিত লোমের সমস্যা থাকে সে ক্ষেত্রে অবাঞ্ছিত লোমের সমস্যা দেখা দিতে পারে৷
অবাঞ্ছিত লোমের সমাধান :
অবাঞ্ছিত লোমের জন্য এখন একটি জনপ্রিয় চিকিৎসা হচ্ছে লেজার ট্রিটমেন্ট। লেজার হচ্ছে বিশেষ ধরনের একটি আলোকরশ্মি। যার মাধ্যমে লোম পাতলা ও সংখ্যায় কমিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় আনা হয়। কিন্তু লেজারের জন্য চিকিৎসকের
পরামর্শ নেয়া উচিত ও যথেষ্ট দক্ষ হাতে তা করানো উচিত। এছাড়া ওয়াক্সি ও রেজারের মাধ্যমে সাময়িকভাবে লোম দূর করা সম্ভব৷
সাবধানতা :
সাময়িকভাবে অবাঞ্ছিত লোম দূর করার আগে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে কেন হচ্ছে তা জেনে নেওয়া জরুরী। কেননা অবাঞ্ছিত লোম অনেকে গুরুত্ব না দিলেও অনেক সময় এটি কোন রোগের লক্ষণ হয়ে থাকে। রোগের শুরুতেই তা সনাক্ত করা গেলে ঔষধ ও সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে তা কমিয়ে আনা সম্ভব।
মস্তিষ্কে সিটিস্ক্যান, আলট্রাসনোগ্রাফি ও বিভিন্ন রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে চিকিৎসকরা সনাক্ত করে থাকেন।