সারাদিন প্রোডাক্টিভ থাকার উপায়

প্রায় সকলেই এখন প্রতিদিন ব্যস্ততার মধ্যে সময় কাটায়। সকালে ঘুম থেকে শুরু হয় এই দৌড়। সারাদিনের অফিস ক্লাস সব কাজ মিটিয়ে দিনশেষে শরীরে যেন আর কোন শক্তি থাকে না বাড়তি কাজ করার। কিন্তু এ কাজের পেছনে ছুটতে ছুটতে আমাদের নিজেদের জন্য করার কিংবা প্রোডাক্টিভ থাকার কোন সময়ই থাকে না। ব্যস্ততায় নিজেকে হারিয়ে ফেলে একসময় বিষন্নতা আমাদের ঘিরে ধরে। তাই দিনের কিছুটা সময় নিজের জন্য রাখা জরুরী। জেনে নেয়া যাক ব্যস্ততার মধ্যেও কিভাবে নিজের জন্য সময় বের করতে পারবেন।

সকালে জলদি উঠা :

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় আমাদের সকালের অ্যালার্ম সেট করা থাকে অফিসে কিংবা ক্লাসে যাওয়ার আধাঘন্টা আগে। তাড়াহুড়ো করে তখন আমরা জলদি ছুটে যাই কাজে। কিন্তু চেষ্টা করা উচিত প্রতিদিন কিছুটা সময় হাতে রেখে ঘুম থেকে ওঠার।
তাহলে কাজে যাওয়ার আগে হাতে কিছুটা সময় থাকবে এবং তাড়াহুড়োর মধ্যে পরতে হবে না। সকালে দ্রুত ঘুম থেকে উঠলে আপনি একান্তই কিছুটা সময় নিজের সাথে কাটাতে পারবেন। যেমন ফ্রেশ শাওয়ার নেওয়া কিংবা ছাদে কিছুক্ষণ নিরিবিরি হাঁটা বই পড়া কিংবা গান শোনা। সকালটা নিজের মতো শুরু করতে পারলে সারাদিন আপনি এনার্জি ফিল করবেন এবং আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়বে। তাছাড়া ঘুম থেকে ওঠার পর আমাদের মস্তিষ্ক অনেক থাকে তখন আমরা যে ধরনের কাজ এই করি না কেন আমাদের ভালো অনুভূতি হয়।

ট্রাফিককে কাজ লাগানো :

ঢাকা শহরের ভয়াবহ ট্র্যাফিক জ্যাম নিয়ে সকলের রয়েছে অভিযোগ। আমাদের দিনের অধিকাংশ সময় কেটে যায় জ্যামে বসে। তাই জ্যামে বসে বিরক্ত বোধ না করে এই সময়টুকু কাজে লাগানোর জন্য নিজের সাথে কিছুক্ষণ সময় কাটান বা নতুন কিছু করা যেতে পারে।যেমন আপনি হয়তো পরিকল্পনা করে রেখেছেন বাড়ি ফিরে বই পড়বেন সেই বইটা চাইলে আপনি ট্রাফিক জ্যামের মধ্যে বসেও পড়ে শেষ করে ফেলতে পারেন। এছাড়া দরকারি কোন টুকটাক কাজ নোট করা ইত্যাদিও আপনি জ্যামের মধ্যে বসে কাজ সেরে ফেলতে পারেন। এক্ষেত্রে কিন্তু জ্যামে বসে আপনার সময়টা অপচয় হলো না বরং কাজে লেগে গেল৷

রুটিন বানানো :

ব্যস্ততায় আমরা অনেক সময় অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে ভুলে যাই। তাই রাতে ঘুমাতে যাবার আগে পরের দিনের যেসব গুরুত্বপূর্ণ কাজ বাকি সেগুলো নোট করে রাখা উচিত। কিংবা সকালে উঠে আজ সারাদিন কি কি করবেন তার একটি লিস্ট করে ফেললে কাজ খুব সহজেই শেষ করা যায়।

নিজের জন্য সময় রাখা :

ব্যস্ততা থাকবে কিন্তু এই ব্যস্ততার মধ্যেও নিজের জন্য কিছুক্ষণ সময় রাখা অনেক বেশি জরুরী। মাইন্ড সেট করতে হবে যতই ব্যস্ত কিংবা ক্লান্ত থাকি না কেন দিনে অত্যন্ত এক ঘন্টা রাখবো সেলফ ডেভেলপমেন্টের জন্য।সেই এক ঘন্টা সময় নতুন কিছু শেখা যেতে পারে। নতুন কোন ভাষা নিয়ে কাজ করা যেতে পারে, বই পড়া, ইংলিশ শেখা কিংবা কোন প্রোডাক্টিভ ভিডিও দেখা।
যারা রান্না করতে ভালোবাসেন তারা নিজের সাথে সময় কাটানোর জন্য কিছু নতুন এক্সপেরিমেন্ট করে রান্না করতে পারেন।

ব্যায়াম করা :

সারাদিন এক্টিভ বা প্রোডাক্টিভ থাকার জন্য ব্যায়ামের অনেক বড় ভূমিকা রয়েছে। দীর্ঘদিন কোন শারীরিক পরিশ্রম না করলে আমাদের শরীর এক্টিভ মুড থেকে সরে যায় এবং আমরা অলস অনুভব করি। শরীর ও মনকে সচল রাখার জন্য দিনে অন্তত ৩০ থেকে ৪০ মিনিট ব্যায়াম করা প্রয়োজন। কঠিন কোন ব্যায়াম করতে না চাইলে শুধু হাঁটাহাঁটি কিংবা আপনার পছন্দের যেকোনো কাজ যেমন সাঁতার কাটা, সাইকেলিং ইত্যাদি যে কোন শারীরিক পরিশ্রম করা যেতে পারে।

ভুল মেনে নেয়া :

কোনো মানুষের পক্ষেই প্রতিদিন রুটিন মেনে চলা কিংবা প্রতিদিন প্রোডাক্টিভ থাকা কখনোই সম্ভব না। মাঝের মধ্যে আপনার তৈরি করার রুটিন ব্রেক করবে এবং আপনি অনেক কাজ সম্পূর্ণ করতে পারবেন না। তবে এটি খুব স্বাভাবিক একটি প্রক্রিয়া। কোনদিন যদি আপনি প্রোডাক্টিভ থাকতেন না পারেন তাহলে সেটা নিয়ে হীনমন্যতায় না ভুগে কিংবা আফসোস না করে পরের দিন আবার চেষ্টা করতে হবে।

Leave a Reply