ভিটামিন সি একটি উপাদান যা স্কিন কেয়ারের বহুমুখী সমস্যার সমাধান করে। এর অন্য নাম হল অ্যাসকরবিক অ্যাসিড। ত্বকের নিষ্প্রাণভাব থেকে শুরু করে সূক্ষ্মরেখা, অমসৃণ খসখসেভাব, ব্রণের দাগ, এ সব কিছু দূর করতে ভিটামিন সি এর জুড়ি নেই।
ভিটামিন সি একটি পানিতে দ্রবীভূত ভিটামিন যা আমরা বিভিন্ন সিট্রাস ফল ও শাকসবজি থেকে পেয়ে থাকি। আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এই ভিটামিন আমাদের দেহের টক্সিক নির্গত করা থেকে শুরু করে মেটাবলিজম সুষ্ঠ রাখে, ওজন কম করতে সহায়তা করে এবং আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তিকে উন্নত করে তোলে। কিন্তু খাদ্য থেকে গ্রহন করা এই ভিটামিন আমাদের ত্বকে তেমন একটা প্রভাব ফেলতে পারেনা।
তাই আমাদের স্কিন কেয়ার রুটিনে এই ভিটামিন অন্তর্ভুক্ত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন সি ক্লিঞ্জার, টোনার, সিরাম, ময়েশ্চারাইজার যেকোন মাধ্যমে ত্বকে গ্রহণ করা যেতে পারে। এতে আছে এন্টি অক্সিডেন্ট যা ত্বক বিশেষজ্ঞদের মতে যে কোনও বয়সের মানুষের ত্বকের সার্বিক সুস্থতায় ও ত্বককে সুন্দর রাখতে বড় ভূমিকা পালন করে।
এছাড়া এই ভিটামিনের পুষ্টিগুণ কোষস্তর থেকে নতুন করে ত্বকের ডিএনএ তৈরি করতে পারে, ফলে কোলাজেন উৎপাদন বাড়ে এবং অতিবেগুনি রশ্মিজনিত ত্বকের ক্ষতিও সেরে যায়।
এটি প্রতিদিন ব্যবহারের পক্ষে নিরাপদ। দিন এবং রাত, দু’বেলার স্কিন কেয়ার রুটিনেই ভিটামিন সি অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।
আসুন জেনে নেই, এই ভিটামিন স্কিন কেয়ারে কি কি ভূমিকা পালন করেঃ
১। কোলাজেন প্রোডাকশন বাড়ায়, ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখেঃ ভিটামিন সি আমাদের শরীরের কোলাজেন তৈরিতে ভূমিকা রাখে। কোলাজেন এমন একটি প্রোটিন যা আমাদের শরীরের হাড়, পেশি, অস্থিসন্ধি, চুল, নখ ও ত্বকের গঠনে বিশেষ ভূমিকা রাখে, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে কোলাজেনের স্বাভাবিক উৎপাদন ক্ষমতা হ্রাস পেতে থাকে। এটি কোলাজেনের প্রোডাকশন বৃদ্ধি করে আমাদের ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে সহায়তা করে।
২। হাইপারপিগমেন্টেশন রোধ করেঃ এতে আছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যা আমাদের ত্বকে থাকা ডার্ক প্যাচ অর্থাৎ হাইপারপিগমেন্টেশন রোধ করে, পাশাপাশি এবনরমাল মেলানিন প্রোডাকশন রোধ করে ত্বককে ভেতর থেকে উজ্জ্বল করে।
৩। ত্বককে হাইড্রেট করেঃ এই ভিটামিন ত্বকের হাইড্রেশন ধরে রাখতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ভিটামিন সি ত্বকে পানি ধরে রাখতে সাহায্য করে, ত্বককে প্লাম্পি ও স্মুদ করে তোলে। ত্বককে অতিরিক্ত অয়েলি ও ড্রাই হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে।
৪। ত্বকের রেডনেস বা লালভাব কমায়ঃ সূর্যের রশ্মি, হরমোনাল অথবা কোন মেডিকেল কন্ডিশনের কারনে আমাদের ত্বকে রেডনেস বা লালভাব দেখতে পাওয়া যায়। এর রেগুলার ব্যবহারে ত্বকের ইনফ্ল্যামেশন বা রেডনেস দূর হয়ে ত্বকের টেক্সচার স্মুদ ও ইভেন করে তোলে।
৫। ফাইন লাইন ও রিংকেলস রোধ করেঃ ভিটামিন সি তে থাকা এন্টি অক্সিডেন্ট ফাইন লাইন ও রিংকেলস রোধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ত্বকে থাকা বার্ধক্যের লক্ষণ হ্রাস করে।
প্রতিদিনের স্কিনকেয়ার রুটিনে নিশ্চিন্তে যোগ করতে পারেন এই উপাদান । কারণ এটি কোমল এবং সেনসিটিভ স্কিনসহ সব ধরনের ত্বকের জন্য উপযোগী। এটি যেকোন ত্বকের সাথেই মানানসই, তেমন কোন সাইড ইফেক্টস দেখা যায়না। বেশিরভাগ উপাদানের সঙ্গেই ভিটামিন সি খুব সহজেই মিশে যায় ; এমনকি, এই ভিটামিন কিছু প্রডাক্টের কার্যকারিতা বাড়িয়ে তোলে। ভিটামিন ই, ফেরুলিক অ্যাসিড সহ নানা উপাদানের সঙ্গে মিশিয়ে এটি ব্যবহার করা যেতে পারে।